চিকিৎসা বিজ্ঞান জগতে যুগান্তকারী নাম ডাঃ এম. শমশের আলী।
তিনি ২০০৩ সাল থেকে অব্যাহতভাবে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজে অধ্যাপনায় নিয়োজিত ছিলেন। দীর্ঘ সময় একটানা অধ্যাপনার অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি বুঝতে পারেন যে, যেহেতু ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ (হৃদরোগ) এক ধরনের জীবনধারা বিপর্যয় জনিত অসুস্থ্যতা। তাই হৃদরোগকে জীবনধারা সংশোধনের মাধ্যমে তাকে মোকাবেলা করাই উত্তম, শুধুমাত্র ইনভেসিভ চিকিৎসা যেমন: রিং ও বাইপাস হৃদরোগ মোকাবেলায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে না।
সূদীর্ঘ পর্যবেক্ষনের পর তিনি আমাদের সামাজিকতা ও শিক্ষা সংস্কৃতির সাথে মিল রেখে চিকিৎসা বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে এলোপ্যাথিক চিকিৎসা প্রদান করেন এবং তার সাথে জীবনধারা পরিবর্তন ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে এক নতুন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতির স্বপ্ন দেখতে থাকেন। এ ধরনের চিকিৎসা প্রদানের ক্ষেত্রে নানাবিধ প্রতিকূলতা সম্মখিন হতে হয়। বিশেষ করে তার সম-সাময়িক চিকিৎসকগন অনেকে অনেক ধরনের সমালোচনা করতে পিছপা হয় নাই। অনেক প্রতিবন্ধকতা মোকাবেল করে বর্তমান সময়ে তিনি “শমশের হার্ট কেয়ার” প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদান করার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। সে কারণেই ২০১৫ সালে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে অধ্যাপনা থেকে সেচ্ছায় চাকুরী ত্যাগ করে এ প্রতিষ্ঠানের জন্যে সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
বর্তমানে শেরপুর জেলায় তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার নকলা থানার নিভৃত গ্রামের এক কৃষক পরিবারে তিনি জন্মগ্রহন করেন। স্কুলে ভর্তি হওয়ার পূর্বেই তিনি তার পিতাকে হারান এবং স্নেহময়ী মা মৃত্যুবরণ করার পূর্ব সময় পর্যন্ত মায়ের আদর স্নেহে বড় হন। নকলা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সফলতার সহিত মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীতে অর্থাভাবে বড় কোন কলেজে পড়ার সুযোগ হয়নি তার। তাই প্বার্শবর্তী উপজেলা নব-প্রতিষ্ঠিত ফুলপুর কলেজ থেকে সফলতার সহিত উচ্চ মাধ্যমিক সমাপ্ত করেন। পরবর্তীতে রংপুর মেডিকেল কলেজ থেকে এম.বি.বি.এস ডিগ্রী অর্জন করেন। ঢাকা ইউনিভার্সিটির অধীনে “জাতীয় হৃদরোগ ইনষ্টিটিউট” থেকে সফলতার সহিত ডক্টর অব মেডিসিন এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.মেড ডিগ্রী অর্জন করেন।
১৯৮৪ সালে তিনি সরকারী চাকুরিতে যোগদান করেন। তিনি প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় দেড় বছর চাকুরি করেন। পরবর্তীতে মেডিকেল অফিসার হিসাবে শেরপুর জেলার নন্দির বাজার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, শেরপুর জেলা হাসপাতাল, জামালপুর জেলার নান্দিনা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং পরবর্তীতে মেডিকেল অফিসার হিসাবে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেন। তারপর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সহকারী রেজিষ্টার মেডিসিন ইউনিট-১ এ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৯৫ সালে তৎকালীন সময়ে শ্রেষ্ঠ ডিগ্রি এমডি (কার্ডিওলজি) ডিগ্রি গ্রহনের জন্য সাবেক পিজি হাসপাতাল বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটি এ জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট এ অধ্যয়ন শেষ করে ২০০১ সালে এমডি কার্ডিওলজি ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরবর্তীতে জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৩ সালে অল্প কিছু দিনের জন্য মিডফোট হাসপাতালে কার্ডিওলজি বিভাগে রেজিষ্ট্রি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজে অধ্যাপনায় যোগদান করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজে চাকুরিরত অবস্থায় তিনি ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে এম.মেড ডিগ্রি অর্জন করেন।